শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
                                           

জাপানে বাড়ছে ভালুকের উৎপাত

দেশ হিসেবে পশ্চিমের সংবাদমাধ্যম রাশিয়াকে ভালুক আখ্যায়িত করতে পছন্দ করে। ফলে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান তাদের চোখে অনেকটা যেন ভালুকের ক্রোধের মতোই। তবে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ যে বনের সত্যিকার ভালুকের ক্ষোভ কিছুটা হলেও বাড়িয়ে দিচ্ছে, জাপানের উত্তরের কয়েকটি জেলাকে এখন সেরকম বাস্তবতার মুখে পড়তে হচ্ছে।

সম্প্রতি জাপানের স্থানীয় দৈনিক আসাহি শিম্বুনে-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই পর্যন্ত গত চার মাসে মানুষের ওপর ভালুকের হামলার ঘটনা বেড়েছে। পত্রিকার হিসাব অনুযায়ী, এ রকম ৫৪টি হামলার ঘটনা সম্পর্কে উত্তরের কয়েকটি জেলার কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে।
২০০৭ অর্থবছর থেকে ভালুকের হামলার ঘটনার নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর থেকে এটি সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি ১৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইওয়াতে জেলায়। এরপর আছে আকিতা ও ফুকুশিমা জেলার অবস্থান। আকিতায় ৯ বার আর ফুকুশিমায় ৭ বার হামলা চালিয়েছে ভালুক। ভালুকের ৫৪টি হামলার ঘটনায় ৫৬ ব্যক্তি আহত হন, তাঁদের মধ্যে ১ জন পরে মারা যান।

ভালুকের হামলা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয় চলতি বছর ওক গাছের বীজ ও ভালুকের পছন্দের খাবার হিসেবে পরিচিত অন্য কয়েকটি শস্যের ফলন কমে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে। ফলন কেন কমে যাচ্ছে, সেই কারণের উল্লেখ মন্ত্রণালয় না করলেও জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে সারের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়াকে স্থানীয় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ দায়ী করছে।

খাদ্য হিসেবে বিবেচিত শস্যের ফলন কমে যাওয়ায় ক্ষুধার্ত অনেক ভালুক খাবারের সন্ধানে জনবসতির কাছাকাছি জায়গাগুলোয় চলে যাচ্ছে। যাঁরা সবজি নিতে পাহাড়ি এলাকায় যান, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ভালুকের হামলার শিকার হচ্ছেন।
এর আগে উত্তরের জেলা হোক্কাইদোতে সবচেয়ে বেশি ভালুকের হামলার ঘটনা ঘটত। তবে হোক্কাইদো কর্তৃপক্ষ ভালুক নিধন বাড়িয়ে দেয়। এতে ভালুকের হামলা কমে যায়। আবার নগর ভালুক নামে একধরনের ভালুক খাবারের খোঁজে প্রায়ই শহরে চলে আসে। তবে মানুষ উত্ত্যক্ত না করলে এরা সাধারণত মানুষের ওপর হামলা চালায় না।
হোক্কাইদোর স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে গত বছর বিশেষ একটি ভালুক মেরে ফেলার পর জেলাজুড়ে ভালুকের হামলার ঘটনা যথেষ্ট কমেছে। বাদামি রঙের বড় আকারের সেই ভালুক ২০১৯ সাল থেকে গবাদিপশু ও মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল।

হোক্কাইদোর কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে তামার মূল্য বেড়ে যাওয়ায় শিকারিদের বুলেট বিতরণ কমে গেছে। ফলে ভালুক নিধন সম্ভব হচ্ছে না।



ফেইসবুক পেইজ